Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

খেলাধুলা ও বিনোদন

প্রাচীনকাল থেকে তিস্তা অববাহিকায় গংগাচড়া অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী ঘোড় দৌড় , লাঠি খেলা , হাডুডু, কানামাছি, বৌছি, নৌকা বাইচ ইত্যাদি খেলা বেশ প্রচলিত ছিল। এখোনো কম বেশী এ খেলাগুলো প্রচলিত আছে।বর্তমানে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। স্কুল ফুটবল, আন্তঃইউনিয়ন ফুটবল এবং উপজেলা ক্রিকেট লীগ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

লাঠিখেলাঃ  এমন একটা সময় ছিল যখন বাংলার প্রতিটা গ্রামেই বসতো লাঠিখেলার উৎসব। ঢোল ডগর আর কাশিরবাজনার সাথে চলতো লাঠির কসরত। কে কত ভাল লাঠি চালাতে পারে তার প্রতিযোগিতা হতো। একজনের লাঠির আঘাত রুখতে আরেকজনের লাঠিতে ঠকঠক আওয়াজের সাথে জোরালো হাততালিতে জমজমাট হয়ে উঠতো উৎসব। গ্রাম-বাংলার সেই চিরচেনা ঐতিয্য লাঠিখেলা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে এখনো কোথাও কোথাও এ ঐতিয্যবাহি লাঠিখেলা টিকিয়ে রাখতে নেয়া হয় উদ্যোগ। 

          কবে কখন শুরু হয়েছিল এই মজাদার লাঠিখেলা তা জানা না গেলেও বাঙালী ঐতিয্যের অতি প্রাচীন অংগ এ লাঠি খেলা। আগে রাজা বাদশাহ ও জমিদারদের লাঠিয়াল বাহিনীর গল্প আমরা শুনেছি। সেসময় লাঠিয়ালদের প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় ব্যবহার করা হতো। আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রের যুগে এসে লাঠিয়াল বাহিনী বিলুপ্ত হলেও চলতে থাকে লাঠিখেলা প্রতিযোগিতা। এক সময় গ্রামে গ্রামে লাঠিখেলার দল গঠন হতো। মাঠের ফসল ঘরে উঠে আসলে অবসর সময়ে চলতো এই উৎসব। এক গ্রামের দল খেলতে যেতো অন্য গ্রামে। হ্যাচাক জ্বালিয়ে বাড়িতে বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত চলতো খেলা। গৃহস্থরা বস্তা বস্তা ধান দিতো খরচ চালাবার জন্য। আনন্দে ভরপুর থাকতো গ্রামের মানুষ। এসব এখন গল্পের মতো।

         গ্রামে গ্রামে সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে মানুষে মানুষে দুরুত্ব সৃষ্টি হয়। এভাবেই লাঠিখেলার দল ভেঙে যেতে থাকে। তবে হারিয়ে যাওয়া এই কৃষ্টি ধরে রাখতে এখনো কোন কোন গ্রামে আয়োজন করা হয় লাঠিখেলার।বিভন্ন জাতীয় দিবসে এ অঞ্চলের নোহালী ইউনয়নের দু একটি দল লাঠি খেলায় অংশগ্রহন করে থাকে।খুব স্বল্প সময়ের জন্য হলেও দুর দুরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ এই খেলা উপভোগ করেছে। 

         লাঠিয়ালরা বললেন, দল গঠন ও খেলা পরিচালনা করা অনেক ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। গ্রামের মানুষের এখন আর সেই মন নেই। সরকারি সহযোগিতা না থাকলে এ ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হবে না। তারা জাতীয়ভাবে লাঠি খেলা আয়োজনের দাবিও জানান।

         গ্রামের মানুষেরা মনে করেন লাঠিখেলা টিকে থাকলে মানুষের মন প্রফুল্ল থাকবে, থাকবে মানুষে মানুষে ঐক্য। আর এই ঐক্যের শক্তি দিয়েই আমাদের সভ্যতা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।